ঢাকা, ৬ অগ্রহায়ণ (২১ নভেম্বর) :

মহান মুক্তিযুদ্ধে অনন্য অবদান রাখা স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের জার্সি আজ
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরকে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা
হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম স্মারক চিহ্ন হিসেবে মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল
হকের হাতে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্য সুভাষ শাহর জার্সি
(১৩ নম্বর) তুলে দেন দলের ম্যানেজার তানজীব মাজহার তান্নাসহ অন্যান্য খেলোয়াড়গণ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, যুব ও ক্রীড়া
প্রতিমন্ত্রী মো.জাহিদ আহসান রাসেল, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম,
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: আখতার হোসেন, তথ্য ও সম্প্রচার
মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মকবুল হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সচিব খাজা মিয়া, প্রধান তথ্য
অফিসার মোঃ শাহেনূর মিয়া, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারা যাকের ও মফিদুল হক,
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে শেখ আশরাফ আলী, সুভাষ সাহা, এনায়েতুর
রহমান, বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠকবৃন্দ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক তাঁর বক্তৃতায় বলেন, স্বাধীন
বাংলা ফুটবল দলের অবদান অস্বীকার করার নয়। তাঁরাও মুক্তিযোদ্ধা। তাঁদের নামে গেজেট
করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল তাঁর বক্তৃতায় বলেন, অনেক ত্যাগের পরে
আজ এই স্বাধীন বাংলাদেশ। সবার অংশগ্রহণের ফলে এটা সম্ভব হয়েছে। আমি স্বাধীন বাংলা
ফুটবল দলের সদস্যদের ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করতে চাই না। তাঁরাও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, বাংলাদেশের
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল অবিচ্ছেদ্য এক অংশ। দেশের ক্রান্তিকালে
বল পায়ে স্বাধীনতার পক্ষে জনমত তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন ফুটবলাররা।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল বাংলাদেশের
মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত অর্জন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যার্থে অর্থ সংগ্রহের
উদ্দেশ্যে ভারতের বিভিন্ন স্থানে প্রদর্শনী ফুটবল খেলায় অংশ নেয়। পৃথিবীর ইতিহাসে
যুদ্ধকালীন প্রথম ফুটবল দল এটি।

ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, তাঁদের হাতে হয়তো অস্ত্র ছিল না, কিন্তু মহান
মুক্তিযুদ্ধে পায়ের ফুটবলটাই হয়ে উঠেছিল অস্ত্রের মতো ধারালো। তাঁদের খেলার মধ্যেই
মিশে ছিল প্রতিবাদের ভাষা। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের পতাকাতলে এই ফুটবলাররা পশ্চিম

বাংলা, বিহার, বেনারস, মুম্বাইসহ ভারতের বিভিন্ন শহরে ১৬টি প্রদর্শনী ম্যাচ খেলেন।
ম্যাচগুলো থেকে প্রাপ্ত কয়েক লাখ ভারতীয় রুপি জমা পড়ে মুক্তিযুদ্ধের তহবিলে। দেশের
স্বাধীনতার জন্য ভিনদেশে প্রীতি ম্যাচ খেলে অর্থ সংগ্রহ বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে বিরল।
উল্লেখ্য, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল ভারতের বিভিন্ন স্থানে ১৬টি প্রদর্শনী ম্যাচের
মধ্যে ১২টি জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ার পাশাপাশি তিনটি খেলার পরাজিত ও একটিতে ড্র করেছিল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here